মুনজের আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য থেকে
যুক্তরাজ্যের হাসপাতাল আর মুসলিম মৃতদেহ দাফনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মর্গে এখন লাশ আর লাশ। পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, কফিনসহ দাফন হচ্ছে মুসলিমদের লাশ। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এর বাইরে নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দাফনের সময় মেশিন দিয়ে মাটি কাটা কবরে আর কেউ নামছেন না। কফিনের বক্সে দড়ি বেঁধে ওপর থেকে কবরস্থানে নামানো হচ্ছে লাশ।
মুসলমানদের কবরস্থানগুলোর প্রতিটিতে দাফন হচ্ছে বহু মরদেহ। লাশ দাফনে রীতিমতো সিরিয়াল পাওয়াও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই পুরুষ। বার্মিংহামের বাসিন্দা শাহনাজ মিয়া জানান, করোনার সেকেন্ড ওয়েভে লেস্টারে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। শহরটিতে প্রচুর বাংলাদেশি মারা গেছেন। গতকালও লেস্টারে তার এক স্বজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারটির অন্য সদস্যরাও সবাই করোনা পজিটিভ। যুক্তরাজ্যে করোনার সেকেন্ড ওয়েভে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুহার বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের।
সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন শহর থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশিদের মৃত্যুর খবর আসছে।
যুক্তরাজ্যের বাংলা মিডিয়ার পেশাদার সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন ইউকে বাংলা প্রেসক্লাব তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর খবরগুলো কমিউনিটিকে অবহিত করছে।
কমিউনিটির প্রবীণ নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী জানান, ফার্স্ট ওয়েভে এতো বাংলাদেশি মারা যায়নি। স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এতো মৃত্যুর মূল কারণ। এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ মানুষ মাস্ক পরছে না। স্যোশাল মিডিয়া ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত চার শতাধিক ব্রিটিশ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। কে এম আবু তাহের চৌধুরী জানান, লন্ডনের বাইরে বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য মুসলমানদের মতো বাংলাদেশিদের মরদেহও কফিন বক্সসহ দাফন হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে গত চার দিনে মারা যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন ওল্ডহোমের বাসিন্দা আলকাস আলী, লন্ডনের আলকাস আলী, নুরুল ইসলাম, রায়হান আহমদ, বার্মিংহামের বাতির মিয়া, লন্ডনের হাজি ফারুক মিয়া, লুটনের আখলাক হোসেন চৌধুরী, লেস্টারের সৈয়দ হারুন আলী, লন্ডনের সুবর্ণ সাহা রজত, ক্যামব্রিজের হাজি আকিকুর রহমান ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এম এ গনি।